ভালোবাসি প্রিয়

@Admin
0



 ব্রেকআপ !!! (চিৎকার করে বলে উঠলো মিম)

রায়হানঃ মানে?

মিমঃ মানে বুঝো না? মানে হলো তোমার আর আমার রিলেশনের এখানেই শেষ! বাই বাই! 

রায়হানঃ আচ্ছা।

মিমঃ আচ্ছা মানে? তুমি কিছু বলবা না?

রায়হানঃ আচ্ছা আজকে কি আমরা শোক পালন করবো? না মানে যেমন ধরো প্রতিদিন আমরা আইসক্রিম, ঝালমুড়ি, ফুচকা খাই আজকে বরং তা না করে সিগারেট খাই!

মিমঃ তুমি আমাকে সিগারেট খাওয়াবা !!!

রায়হানঃ না মানে কষ্ট ভুলতে তো মানুষ তা-ই করে!

মিমঃ তোমার কি মনে হয় আমার কষ্ট লাগবে? মোটেও না!
রায়হানঃ ওওওওওও

রাগে হাতের ব্যাগটা আছাড় মেরে মিম বললো,
তুমি একটা ছাগল আর একটা ছাগলের সাথে কোনো মানুষের সম্পর্ক থাকতে পারে না! কথাটা বলেই বাসার দিকে হাঁটতে লাগলো মিম মিমের ফেলে যাওয়া ব্যাগটা হাতে নিলো রায়হান। ভেতরে একটা মোবাইল আর কিছু টাকা আছে। রায়হান একবার ভাবলো মিমকে ব্যাগের জন্য ডাক দিবে ৷ কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তাটা বাদ দিল। ব্যাগটা হাতে নিয়েই হাঁটা শুরু করলো রায়হান । দুটো বাচ্চা মেয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে দড়িলাফ খেলছিল। রায়হানের হাতে মেয়েদের ব্যাগ দেখে খিলখিল করে হেসে উঠলো মেয়ে দুটো। ওদের হাসি দেখে রায়হানও হেসে দেয়। তবে এবার আর মেয়ে দুটো হাসে না। হয়তো রায়হানকে পাগল ভাবছে! 

মিমঃ হ্যালো, তুমি আমার মোবাইলসহ ব্যাগ চুরি করলা কেন?

রায়হানঃ না, না আমি তা করিনি! তুমিই তো ব্যাগটা ফেলে আসলে।

মিমঃ একদম মুখের ওপর কথা বলবা না! কালকে আমার ব্যাগ নিয়ে সোজা ওখানে চলে আসবা।বাই! 

ফোনটা কেটে দিল মিম! কাঁদছে ও! দুটো কারণে (ব্যাগটা ও ইচ্ছে করেই ফেলে এসেছে) প্রথমত, এই ব্যাগের অজুহাতে আবার রায়হানের সাথে দেখা করা যাবে! আর দ্বিতীয়ত, আজই রায়হানের কলেজে পরিক্ষার ফিস দেয়ার শেষ দিন। তাই ব্যাগে টাকাটা রেখে এসেছে যাতে বাধ্য হয়ে ওর টাকাটা দিয়ে পরিক্ষার ফিস দিতে পারে রায়হান ৷ এমনিতে সরাসরি দিলে রায়হান তা কোনোদিনই নিতো না!তাই বাধ্য হয়েই ঝগড়াটা সৃষ্টি করছিল ও! আধঘণ্টা ধরে বসে আছে মিম। কিন্তু রায়হান আসার কোনো নাম নেই! যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই দৌড়াতে- দৌড়াতে সামনে এসে দাঁড়ায় রায়হান! 

রায়হানঃ সরি! এই নাও তোমার ব্যাগ! আর একটা কথা বলবো?

মিমঃ কি?

রায়হানঃ আমি তোমার টাকাগুলো খরচ করে ফেলেছি! মিমের মুখে একটা প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো! কিন্তু মুখে বললো, ফাও কথা বলবা না! ব্যাগে কোনো টাকা ছিল না! 

রায়হানঃ না, না, সত্যি ছিল! তোমার ওই টাকা দিয়েই তো জব্বার চাচাকে একটা পাঞ্জাবী কিনে দিয়েছি! সরি! প্লিজ কিছু মনে করো না! আসলে হাতে কোনো টাকা ছিল না তাই! তবে এ মাসের টিউশিনির টাকাটা পেলেই দিয়ে দিবো! তুমি তো চাচার কথা সবই জানো! তাই আর কি সরি!

 ঠোঁটচেপে কান্না আটকে রেখেছে মিম! যে মানুষটা নিজেই ঠিকমত চলতে পারে না, যার নিজেরই একটা ভালো জামা নেই, যে নিজেই সারা বছর কষ্ট করে কাটায়, সেই মানুষটাই কিনা আরেকজনকে সাহায্য করে তার জন্য আমার কাছে মাফ চাইছে! কোনোমতে নিজেকে সামলে উঠে মিম বললো, 

তোমাকে কলেজ থেকে বের করে দেয়নি? 

রায়হানঃ না! আরো দুই দিন সময় দিয়েছে ।

মিমঃ বের করে দিলে খুশি হতাম!

রায়হানঃ আচ্ছা আজ থেকে কি তোমার ফোন রিসিভ করবো? 
না মানে তুমি তো কাল বললে 

মিমঃ হ্যাঁ, আজকে থেকে তুমি আর আমার ফোন রিসিভ করবা না! 
কিন্তু ফোন ঠিকই দিবা! না দিলে চড়দিয়ে আক্কেল দাঁতসহ সবগুলো দাঁত ফালায়া দিবো! 


এই বলেই এবার আর কান্না আটকে রাখতে পারলো না মেয়েটা! অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো রায়হান! আর দশটা সাধারণ গল্পের ছেলেগুলোর মতো রায়হানও বুঝতে পারছে না মেয়েটা কেন কাঁদছে! শুধু মনে- মনে বলছে- আবার কি করলাম—??

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)